ক্ষুদ্র অবকাঠামো উন্নয়ন

বাংলাদেশে বৈদেশিক বিনিয়োগের সু্যোগ অনেক। সাম্প্রতিককালে, বাংলাদেশ সরকার বেসরকারি বিনিয়োগে একটি সহায়ক ও প্রতিযোগিতামূলক পরিবেশ সৃষ্টির লক্ষ্যে দেশীয় ও আন্তর্জাতিক বাণিজ্য ও বিনিয়োগ নীতির ক্ষেত্রে বেশ কিছু পুরাতন ব্যবসার সংস্কার করেছে।
দেশটিতে বিনিয়োগ ও টেকসই উন্নয়নের জন্য সহায়ক স্থিতিশীল রাজনৈতিক পরিবেশ বিরাজমান।
বেসরকারি বাণিজ্য খাতের প্রবল আগ্রহের কারণেই বাংলাদেশ বাজার অর্থনীতি প্রবর্তনে দ্রুত বিভিন্ন কার্যকরী প্রাতিষ্ঠানিক সংস্কার কর্মসূচি গ্রহণ করে। ইতোমধ্যেই একটি মাঝারি মানের কিন্তু সুষম অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি অর্জন করেছে। অর্থনৈতিক নীতির মূল ভিত্তি হলো সম্পদের উৎপাদন ও বণ্টনে প্রতিযোগিতামূলক বাজার অর্থনীতির ওপর আস্থা এবং বেসরকারি খাতের ওপর নিয়ন্ত্রণমূলক অর্থনৈতিক ব্যবস্থা দূর করা। সরকার ধাপে ধাপে শিল্প ও অবকাঠামোগত ক্ষেত্রে নিজের সম্পৃক্ততা সরিয়ে বেসরকারি অংশগ্রহণকে উৎসাহিত করছে।
অর্থনৈতিক নীতিসমূহের ক্ষেত্রে সরকার দ্রুত সুনির্দিষ্ট সংস্কার পরিকল্পনা হাতে নিয়েছে এবং সবার জন্য উন্মুক্ত বিনিয়োগ নীতি প্রণয়ন করেছে। এক্ষেত্রে সরকারের ভূমিকা অনুঘটকের, কোনোভাবেই নিয়ন্ত্রকের নয়। নিয়ন্ত্রণ ও বিধিনিষেধকে ন্যূনতম একটি পর্যায়ে নিয়ে আসা হয়েছে। সরকার সুষম গতিতে বাণিজ্য ক্ষেত্রে উদারীকরণ করেছে। শুল্কমুক্ত বাণিজ্য সুবিধা, যৌক্তিক শুল্ক নির্ধারণ এবং রপ্তানী সুবিধা বৃদ্ধির ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য অর্জন সাধিত হয়েছে। শিল্পহার কাঠামো ও আমদানি নীতির বিভিন্ন দিক সর্বাধিক গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে।

রাষ্ট্র নিয়ন্ত্রিত শিল্প ও বাণিজ্য প্রতিষ্ঠানসমূহের অদক্ষতা, সম্পদের অপব্যবহার প্রবণতা এবং পরিবর্তনশীল বাজার ও ভোক্তা চাহিদা নির্ধারণে অক্ষমতা সরকারকে ব্যাপকভিত্তিক বেসরকারিকরণ কর্মপরিকল্পনা হাতে নিতে বাধ্য করেছে। আন্তর্জাতিক বিনিয়োগকারীদের জন্য সহায়ক ও আকর্ষণীয় প্রস্তাবসহ বিভিন্ন পরিকল্পনা হাতে নেওয়া হয়েছে।

টেক্সটাইল, চামড়াজাত সামগ্রী, ইলেকট্রনিক্স দ্রব্য, রাসায়নিক ও পেট্রোকেমিক্যাল, কৃষি ভিত্তিক শিল্প, কাঁচা পাট, কাগজ, রেশম শিল্প, হিমায়িত খাদ্য (বিশেষত চিংড়ি), পর্যটন, কৃষি, ক্ষুদ্র শিল্প, সফটওয়্যার ও ডাটা প্রসেসিং এর মতো রপ্তানীমুখী শিল্পে বিদেশি বিনিয়োগকে আকৃষ্ট করার চেষ্টা করা হচ্ছে। এছাড়াও ভারী ও তথ্য-প্রযুক্তির শিল্প প্রতিষ্ঠায়ও বিদেশি বিনিয়োগকে আমন্ত্রণ জানানো হচ্ছে যা দেশীয় আমদানি ব্যয় কমাতে সাহায্য করবে।

বাংলাদেশের কিছু বিদেশি বিনিয়োগ সুবিধা:
• ১০০ ভাগ সরাসরি বিদেশি বিনিয়োগ (ডিএফআই) অথবা রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ এলাকাতে (ইপিজেড) যৌথ বিনিয়োগ অথবা এ এলাকার বাইরের বিনিয়োগ,
• স্টক এক্সচেঞ্জ এর মাধ্যমে পাবলিক কোম্পানির শেয়ার ক্রয়ের দ্বারা তালিকাভুক্ত বিনিয়োগ,
• অবকাঠামোগত প্রকল্পে বিনিয়োগ যেমন বিদ্যুৎ খাত, তেল, গ্যাস ও খনিজ অনুসন্ধান, টেলিযোগাযোগ, বন্দর, সড়ক ও জনপথ,
• সরাসরি/ প্রত্যক্ষ ক্রয় অথবা সরকারি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ক্রয় করা (বেসরকারিকরণ প্রক্রিয়াধীন কোনো প্রতিষ্ঠানের শেয়ার,
• বেসরকারি ইপিজেড বিনিয়োগ।

বেসরকারি উদ্যোগে রপ্তানিমুখী ও প্রক্রিয়াজাতকরণ শিল্প প্রতিষ্ঠায় দেশীয় ও বিদেশি বিনিয়োগকারীদের সব ধরনের সেবা প্রদানের জন্য বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ দায়িত্বপ্রাপ্ত । সব ধরনের বিনিয়োগকারীদের বিনিয়োগ ও ব্যবসা সহায়তা প্রদান করা এই কর্তৃপক্ষের মূল লক্ষ্য। সরকার প্রধানের নেতৃত্বে পরিচালিত বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষে বিনিয়োগ সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়, সচিবালয় এবং বিভিন্ন ব্যবসায়িক প্রতিনিধিগণ সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।

দেশি ও বিদেশি বিনিয়োগকারীদের আকৃষ্ট করতে এ কর্তৃপক্ষ ইতোমধ্যে বিভিন্ন কর্মসূচি হাতে নিয়েছে। বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ বিভিন্ন সেবা দেওয়ার সাথে সাথে নতুন প্রকল্প বাস্তবায়নের কাজ করে যাচ্ছে।

দেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিকে দ্রুত গতিশীল করতে বিশেষত শিল্পায়নকে শক্তিশালী করতে সরকার বিদেশি বিনিয়োগকে আকৃষ্ট করতে একটি উন্মুক্ত নীতি গ্রহণ করেছে। বাংলাদেশ রপ্তানি প্রক্রিয়াজাতকরণ কর্তৃপক্ষ (বেপজা) দেশের রপ্তানি প্রক্রিয়াজাতকরণ এলাকায় বিদেশি বিনিয়োগ আকৃষ্ট করা ও শিল্প স্থাপনে বিভিন্ন সহায়তা প্রদানে দায়িত্ব পালন করছে।

বাংলাদেশ ইতোমধ্যে বিদেশি বিনিয়োগকারীদের জন্য একটি সহায়ক পরিবেশ সৃষ্টি করতে পেরেছে এবং তাদের আস্থা অর্জনে সফল হয়েছে।

  • এক ঠিকানায় সকল সরকারি সেবা